প্যারিস প্যারা অলিম্পিকে ভারতীয়দের পারফরম্যান্স দেশকে একের পর এক পদক এনে দিতে সাহায্য করছে। প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে রেখে এই ক্রীড়াবিদের লড়াইকে এখন সমর্থকরা কুর্নিশ জানাচ্ছেন। গতকাল অর্থাৎ ৪ সেপ্টেম্বর, বুধবার তীরন্দাজ বিভাগে হরবিন্দর সিংয়ের হাত ধরে আরও একটি সোনার পদক এল। এরপরই তার জীবনের কঠিনতম লড়াইয়ের গল্পও এবার সামনে উঠে এল।
এই বছর এখনও পর্যন্ত ভারতীয় দল প্যারিস প্যারা অলিম্পিকে মোট ২৪ টি পদক জয় করেছে। এই সংখ্যা টোকিও প্যারা অলিম্পিকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। হরবিন্দর সিং টোকিও প্যারা অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছিলেন। এবার তিনি প্যারিস প্যারা অলিম্পিকে পুরুষদের তীরন্দাজ বিভাগের সেমিফাইনালে ইরানের মহম্মদ রিজা আরব আমেরির কাছে পিছিয়ে থেকে শেষ ৩ সেটে দুরন্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ফিরে এসে ফাইনালে জায়গা করে নেন। এরপর গতকাল ফাইনালে হরবিন্দর সিং পোল্যান্ডের লুকাস সিজেককে দাঁড়াতেই দেননি।
প্রথম ৩ সেটেই দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নেন। এর ফলে পোল্যান্ডের প্রতিপক্ষকে ৬-০ স্কোরে হারিয়ে প্রথম ভারতীয় তীরন্দাজ হিসাবে হরবিন্দর ইতিহাস তৈরি করেন। উল্লেখ্য এই ভারতীয় তারকা ক্রীড়াবিদ ১৯৯১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার কাইথাল জেলার অজিত নগর গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যখন তার মাত্র দেড় বছর বয়স তখন হরবিন্দর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য তাকে একজন স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়।
কিন্তু এই ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে প্যারিস প্যারা অলিম্পিকের সোনা জয়ী ভারতীয় তীরন্দাজ চিরজীবনের জন্য পায়ের শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তবে তিনি থেমে জাননি প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০১২ সালের লন্ডন প্যারা অলিম্পিক দেখার পর তিরন্দাজির প্রতি আগ্ৰহ খুঁজে পান। বাবা চাষের জমি পরিষ্কার করে তাকে প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে দীর্ঘ লড়াইয়ের মাধ্যমে আজ হরিয়ানার হরবিন্দর অলিম্পিকের মঞ্চে ভারতের অন্যতম গৌরব হয়ে উঠলেন।